IQNA

সুরা মুজ্জাম্মিলের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

0:10 - January 21, 2024
সংবাদ: 3474976
ইকনা: পবিত্র কোরআনের ৭৩ নম্বর সুরা মুজ্জাম্মিল। এটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। এর আয়াত সংখ্যা ২০। রুকু দুটি।

প্রথম আয়াতের মুজ্জাম্মিল শব্দ থেকে এটির নাম দেওয়া হয়েছে। সুরাটির প্রথম রুকুতে রাসুল (সা.)-কে রাতের একটি অংশে তাহাজ্জুদ নামাজ বাধ্যতামূলককরণ, কোরআন তিলাওয়াত ও কাফিরদের শারীরিক ও মানসিক জুলুম-নির্যাতনে ধৈর্য ধারণের উপদেশ দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় রুকুতে তাহাজ্জুদ নামাজের বিধান শিথিল করা হয়েছে। এ সুরার সংক্ষিপ্ত আলোচনা নিচে দেওয়া হলো—
 

সুরা মুজ্জাম্মিলের শানে নুজুল

মক্কার কাফিরদের নানা বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে ইসলাম প্রচার করেছেন রাসুল (সা.)।

এতে কাফিররা তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠে। তারা দারুন নাদওয়া সংসদে বসে একের পর এক ষড়যন্ত্রের জাল বোনে। জাবের (রা.) বলেন, একদিন তারা একত্র হয়ে পরস্পর বলাবলি করতে লাগল, মুহাম্মাদ (সা.)-এর এমন একটি নাম নির্বাচন করা হোক, যা শুনে বহিরাগত লোক তাঁর কাছে না ভিড়ে। এই প্রস্তাবের সমর্থনে তাদের কেউ কেউ গণক, পাগল, জাদুকর ইত্যাদি প্রস্তাব পেশ করে।
এতে অন্যরা প্রতিবাদ করে। এভাবে তারা বিভক্ত হয়ে পড়ে। শেষমেশ বৈঠক এখানে সমাপ্ত হয়। এ সংবাদ শুনে রাসুল (সা.) ভারাক্রান্ত মনে চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়েন। ওই সময় সুরাটির প্রথম রুকু অবতীর্ণ হয়।
জিবরাইল (আ.) এসে বলেন, হে বস্ত্রাবৃত! রাত জাগরণ করুন কিছু অংশ ছাড়া। অর্ধরাত কিংবা তদপেক্ষা কিছু কম। অথবা তদপেক্ষা বেশি...। প্রথম রুকু অবতীর্ণ হওয়ার দীর্ঘ এক বছর পরে দ্বিতীয় রুকু অবতীর্ণ হয়েছে। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সুরা মুজ্জাম্মিলের প্রথমাংশ অবতীর্ণ হওয়ার পর সাহাবারা রোজার মাসের মতো রাত জেগে নামাজ আদায় করতেন। অতঃপর উক্ত সুরার শেষাংশ অবতীর্ণ হয় এবং সুরা মুজ্জাম্মিলে প্রথম ও শেষাংশের অবতীর্ণ হওয়ার মধ্যে সময়ের ব্যবধান ছিল এক বছর। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৩০৫)
তাহাজ্জুদ নামাজের বিধান

প্রাথমিক পর্যায়ে রাসুল (সা.)-এর ওপর তাহাজ্জুদ নামাজ ফরজ ছিল। পরে ফরজের বিধান রহিত করা হয়। তবু তিনি সারা জীবন গুরুত্বের সঙ্গে তাহাজ্জুদের বিধান পালন করে গেছেন। উম্মুল মু'মিনির হযরত আয়েশা বলেন, যখন এ সুরার প্রথমাংশ নাজিল হয় (যাতে তাহাজ্জুদ ফরজ হয়) তখন সাহাবায়ে কেরাম এত দীর্ঘ তাহাজ্জুদ পড়তেন যে তাঁদের পা ফুলে যেত। আর এ সুরার শেষাংশ ১২ মাস পর্যন্ত আসমানে আটকে থাকে। ১২ মাস পর যখন এর শেষাংশ নাজিল হয়, তখন তাহাজ্জুদ নফল হয়ে যায়। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৩৪২)


কোরআন পাঠ করার নিয়ম

সুরা মুজ্জাম্মিলে কোরআন তিলাওয়াত করার নিয়ম-কানুন শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। তারতিল ও তাজবিদের সঙ্গে কোরআন পাঠ করা ওয়াজিব। আল্লাহ তাআলা বলেন, হে রাসুল! আপনি কোরআন তিলাওয়াত করুন ধীরে ধীরে স্পষ্ট ও সুন্দরভাবে। তিনি বরাবর হুকুম পালন করে গেছেন।

রাসুল (সা.) নামাজের কিরাত পরিপূর্ণ ওয়াকফ করে তিলাওয়াত করতেন। উম্মে সালামা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) আলাদা আলাদা করে কেটে কেটে কিরাত পাঠ করতেন। তিনি পড়তেন—‘আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন’, এরপর থামতেন। ‘আর-রাহমানির রাহিম’-এর পরে থামতেন। তারপর তিনি পড়তেন—‘মা-লিকি ইয়াওমিদ্দিন।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৯২৭)

সবার সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

captcha