IQNA

'উইঘুর মুসলিম গণহত্যায় চীনকে সহায়তা দিচ্ছে ওআইসি'

13:52 - December 19, 2020
সংবাদ: 2611979
তেহরান (ইকনা): জিনজিয়ানের উইঘুরসহ সংখ্যালঘু মুসলমানদের বিরুদ্ধে চীনের চালানো নৃশংসতাকে গণহত্যা হিসেবে আখ্যা দিয়েছে কয়েকটি দেশ। কিন্তু এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত টু শব্দটি উচ্চারণ করেনি মুসলমানদের সর্ববৃহৎ জোট ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা ওআইসি।

উইঘুরদের প্রতি চীনের নির্মমতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর জন্য ওআইসির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মুসলমানদের সংগঠনগুলো। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তর সংস্থা ওআইসির বিরুদ্ধে চীনের গণহত্যায় সহযোগিতারও অভিযোগ তুলেছে তারা।

বিশ্বের যেখানেই মুসলমানরা নির্যাতিত-নিপীড়িত হয় কমবেশি সমালোচনা করে ৫৭টি সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশের জোট ওআইসি। ফিলিস্তিনের ভূখণ্ডে ইসরাইলের অত্যাচারের তীব্র সমালোচনা করে জোট। পাকিস্তানের অনুরোধে সাড়া দিয়ে ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদী সরকারের চালানো মুসলিম নিধনের নিন্দাও জানিয়েছে ওআইসি।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য জিনজিয়ানে উইঘুর এবং তুর্কিভাষী ১০ লাখের বেশি মুসলমানকে গণকারাগারে বন্দি করে নির্মম নির্যাতন চালাচ্ছে বেইজিং। তাদের ইসলাম ধর্ম ত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে। দীক্ষা দেওয়া হচ্ছে সমাজতন্ত্রের। এসবের পরও সৌদি আরবে অবস্থিত সংস্থাটির প্রধান কার্যালয় থেকে ন্যূনতম উদ্বেগও জানানোও হয়নি।

বৃহস্পতিবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে মুসলিম আমেরিকান স্কলার এবং মানবাধিকারকর্মী ওমার সুলেইমান বলেন, বিষয়টি পরিষ্কার যে, মুসলিম দেশগুলোতে চীনের শক্তিশালী অর্থনৈতিক অবস্থান রয়েছে। এ কারণে মুসলিম বিশ্বকে ভয়ের মাধ্যমে কোণঠাসা করতে পড়েছে বেইজিং। তারা এখন উইঘুর ইস্যুতে কোনো কথাই বলছে না।

গত বছর ওআইসির প্রতিনিধি দল জিনজিয়ান সফর করে। ওই বছরের মার্চে সংস্থার পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাব পাস করা হয়। সেখানে মুসলিম নাগরিকদের জন্য চীনের নেওয়া বিভিন্ন সেবামূলক উদ্যোগের প্রশংসা করে ওআইসি। আমেরিকান ইসলামিক রিলেশসন কাউন্সিলসহ মুসলমানদের সংগঠনগুলোর জোটের অভিযোগ, চীনের ক্ষমতার কাছে নতিস্বীকার করেছে ওআইসির সদস্য রাষ্ট্রগুলো।

কিছু মুসলিম দেশ ফিলিস্তিন ইস্যুতে কথা বললেও উইঘুর ইস্যুতে তারা অত্যাচারে, নৃশংস-নির্মমতাকে সহায়তা করেছ। বিশেষ করে আশ্রয়প্রার্থী উইঘুরদের তারা চীনের হাতে তুলে দিচ্ছে। উইঘুর মানবাধিকারকর্মী রুশান আব্বাস সতর্ক করে বলেন, বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনফ্রাস্ট্রাকচার বিল্ডিং পদক্ষেপের মাধ্যমে মুসলিম দেশগুলোকে টার্গেট করেছে চীন। ওই দেশগুলোতেও চীনের উইঘুর নীতি রফতানি করবে বেইজিংয়ের কমিউনিস্ট সরকার।

রুশান আব্বাস বলেন, ''চীনের পুরানো অভ্যাস। যাকে কেনা যায়, কিনে ফেলে। না হয় হুমকি দিয়ে চুপ করিয়ে রাখে। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না; উইঘুর গণহত্যা চীনের অভ্যন্তরীণ কোনো বিষয় নয়; মানবিক ইস্যু।'' মানবিক কার্যক্রম নিয়ে সরব হওয়ায় তার বোনকে চীন সরকার বন্দি করে রেখেছে বলেও জানান তিনি।

চীনের ক্রমবর্ধমান প্রতিদ্বন্দ্বী যুক্তরাষ্ট্র উইঘুর নৃশংসতাকে জার্মানির নাৎসি বাহিনীর বর্বরতার সঙ্গে তুলনা করেছে। জিনজিয়ানে মুসলিম নির্যাতনের বিষয়ে ওআইসির মুখে কুলুপ এঁটে থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছে ওয়াশিংটন। বন্দিশালাগুলোকে কারিগরি শিক্ষা কেন্দ্র হিসেবে অভিহিত করে আসছে চীন। পশ্চিমা দেশগুলোর মতো তারাও বলছে, ইসলামি উগ্রবাদ মোকাবিলায় কাজ করছে তারা।
সূত্র: আলজাজিরা।

captcha