IQNA

কুরআনের সূরাসমূহ/২৮

আল্লাহর বিরুদ্ধে সম্পদ ও ক্ষমতার ব্যর্থতার গল্প

0:02 - August 31, 2022
সংবাদ: 3472380
তেহরান (ইকনা): ইতিহাসের পাতায় কিছু ব্যক্তিদের কথা উল্লেখ রয়েছে যারা তাদের শক্তি বা সম্পদের উপর নির্ভর করে ঐশ্বরিক শক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে, কিন্তু অতীত থেকে যা অবশিষ্ট রয়েছে তা দেখায় যে অত্যাচারীদের শক্তি বা ধনীদের সম্পদ কোনটাই ঐশ্বরিক শক্তিকে প্রতিরোধ করতে পারেনি।

কুরআনের আটাশতম সূরাকে কাসাস বলা হয়। এই সূরাটি মক্কী সূরা এবং নাযিলের ক্রমানুসারে ৪৯তম সূরা যা প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)এর উপর নাযিল হয়েছে। ২০ পারায় অবস্থিত এই সূরায় মোট ৮৮টি আয়ার রয়েছে।
এই সূরাটিকে "কাসেস" নামকরণের কারণ হল, এই সূরায় নবীদের কিছু ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। হযরত মুসার (আ.) জন্মগ্রহণ, শোয়েবের কন্যার সাথে তার বিবাহ, ফেরাউনের সাথে মুসার (আ.) যুদ্ধ, কারুনের কাহিনী এবং নবী (সা.)কে বিশ্বাস না করার জন্য মক্কার মুশরিকদের অজুহাত সূরা কাসাসের কিছু বিষয়।
আল্লামা তাবাতাবায়ী সূরা কাসের মূল উদ্দেশ্য হিসেবে উল্লেখ করেছেন যে, ঈমানদারদের বা বিশ্বাসীদের জন্য বিজয়ের প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করা যা মক্কায় একটি ছোট দল ছিল এবং মদিনায় হিজরত করার আগে এবং সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে জীবনযাপন করেছিল এবং যে আল্লাহ তাদের অনুগ্রহ করেছেন এবং ফেরাউনের উপর তাদের জয়লাভ করিয়েছেন; এ উদ্দেশ্যে মূসার জন্ম থেকে ফেরাউনের বিরুদ্ধে বিজয়ের কাহিনী বর্ণনা করেন।
মুসলমানদের কষ্ট ও দুর্দশার সময় নাযিল হওয়া এই সূরাটি ফেরাউনের যুদ্ধে ইসরাইলীদের কষ্টের সাথে তাদের জীবনকে তুলনা করে এবং তাদের বিজয়, অত্যাচারী শাসকদের পরাজয় এবং জমির উত্তরাধিকারের প্রতিশ্রুতি দেয়।
এই সূরায় হযরত মূসার (আ.) জন্ম থেকে তার নবুওয়াত এবং ফেরাউনের সাথে তার লড়াই এবং ইসরাইলদের দুর্বলতা থেকে রক্ষা করার পাশাপাশি কারুনের অত্যাচার এবং তার তিক্ত পরিণতির গল্প বলা হয়েছে।
সূরা কাসাসের অন্য একটি অংশে তিনি কারুনের গল্প বলেছেন, যিনি নিজের জ্ঞান ও সম্পদের উপর ভরসা করে গর্বিত হয়েছিলেন এবং ফেরাউনের মতো পরিণতি পেয়েছিলেন। মূসার সামনে ফেরাউন ও কারুনের ধ্বংসের কাহিনীর উদাহরণের ব্যাখ্যা মক্কার মুসলমানদের জন্য এই বিষয়টি স্পষ্ট করে যে মক্কার ধনী বা মুশরিকদের শক্তিশালী কেউই নির্যাতিতদের বিজয়ের জন্য আল্লাহর ইরাদার মুখোমুখি হওয়ার ক্ষমতা রাখে না।
এই সূরার কিছু অংশে তিনি একেশ্বরবাদ ও পুনরুত্থান, কুরআনের গুরুত্ব, কিয়ামতের দিন মুশরিকদের মর্যাদা, হেদায়েত ও গোমরাহীর বিষয় এবং দুর্বল ঈমানের অধিকারীদের নবী করিম (সা.)এর প্রতি ঈমান আনার অজুহাতের উত্তর নিয়ে আলোচনা করেছেন।

সংশ্লিষ্ট খবর
captcha